
উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের হ্রদ ঘেরা অঞ্চলটার যে হোটেলটায় আমি ছিলাম সেখানে আমার সাথে এক মার্কিন নারীর দেখা হয়েছিল; সে বলছিল, ‘বোকার মত একটা ভুল করে ফেলেছি। বইটা কাউন্টারের উপরেই ছিল, পেপার কভার ওয়ালা ছয় পেনি দামের পেঙ্গুইন বুকসের অন্যান্য বইগুলোর সাথেই ছিল। আমি ভেবেছিলাম বইটা গোয়েন্দা বই-ই হবে। পাশের অন্য সবগুলোই ছিল গোয়েন্দা গল্পের বই। সেগুলো সব আমার আগেই পড়া। তাই খুব একটা খেয়াল না করেই আমি বইটা কিনে ফেলেছিলাম। বুঝতেই পারছ, ওটা যে শেক্সপিয়ার তা আবিষ্কার করে আমি কতটা রেগে গিয়েছিলাম!’ আমি সান্ত্বনার সুরে বিড়বিড় করে কিছু একটা বললাম। আমার সঙ্গীনীটি বলে চলল, ‘পেঙ্গুইন ওয়ালাদের শেক্সপিয়ারের নাটক সহ অন্যান্য সব বই-ই গোয়েন্দা গল্পের বইগুলোর সাইজে বের করতে হবে কেন তা আমি বুঝিনা।’ আমি বললাম ‘আমার মনে হয় ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার বইয়ের প্রচ্ছদ ভিন্ন ভিন্ন রংয়ের হয়।’ সে বলল ‘ও! তা আমি খেয়াল করিনি। যাই হোক, সে রাতে খুব আয়েশ করে শুয়ে আমি একটা ভালো রহস্য গল্প পড়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। অথচ, আমার হাতে ছিল কিনা উচ্চ মাধ্যমিকের একটা পাঠ্যবই দা ট্রাজেডি অফ ম্যাকবেথ! আমি বললাম, ‘আইভানহো কিংবা লরনা ডুনের মত।’ মার্কিন সেই নারী বলল, ‘ঠিক তাই। আমি একটা ভাল আগাথা ক্রিস্টি কিংবা অমন কিছুর জন্য মুখিয়ে ছিলাম। হারকিউল পাইরট আমার প্রিয় গোয়েন্দা।’ ‘ঐ খরগোশের মতন দাঁতাল লোকটা?’ আমি প্রশ্ন করলাম। ক্রাইম ফিকশন বিশেষজ্ঞ সেই নারী জবাব দিল, ‘আরে না, সে তো বেলজিয়ামের। তুমি মিস্টার পিংকারটনের কথা ভাবছো। যে লোকটা ইন্সপেক্টর বুলকে সাহায্য করে। অবশ্য সে-ও ভালো।’
দ্বিতীয় কাপ চা খেতে খেতে আমার সঙ্গিনীটি একখানা গোয়েন্দা গল্পের প্লট আলোচনা করতে শুরু করল; এই গল্প নাকি তাকে পুরোপুরি বোকা বানিয়েছিল—- পুরোটা সময় জুড়েই মনে হতে থাকে বুড়ো-হাবড়া ঐ পারিবারিক ডাক্তারটাই নাটের গুরু। কিন্তু আমি ওর কথার মাঝেই প্রশ্ন করে বসলাম। ‘ম্যাকবেথ পড়েছিলে?’ ও বলল, ‘পড়তে হয়েছিল। পুরো ঘরটাতে পড়ার মতো আর এক টুকরো কাগজও ছিলনা।’ ‘তোমার পছন্দ হয়েছে?’ আমি প্রশ্ন করলাম। সে জোর দিয়ে বলল, ‘না, পছন্দ হয়নি। প্রথমত, আমার মনেই হয় না ঐ কান্ডটা ম্যাকবেথ ঘটিয়েছে।’ আমি তার দিকে দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম, জিজ্ঞেস করলাম ‘কোনটা?’ সে বলল, ‘আমার একবারের জন্যও মনে হয়নি ম্যাকবেথ রাজাকে খুন করেছে। ম্যাকবেথের স্ত্রী খুনটার সাথে জড়িত এমনটাও আমার মনে হয় না। যদিও যে কারোরই তাদেরকে নিয়েই সন্দেহ হবে। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই তারা নির্দোষ কিংবা বলা যায় কোনভাবেই তাদের দোষী বলে মনে করা উচিত না।’ আমি কিছু একটা বলতে শুরু করাতে আমাকে থামিয়ে সেই মার্কিন নারী বলল, ‘ঘটনাটা কে ঘটিয়েছে তা যাদি শুরুতেই বুঝে ফেলা যায় তবে তো পুরো ব্যাপারটাই ভেস্তে যাবে। শেক্সপিয়ার তো বেশ চালাক ছিল, তার অমনটা করার কথা না। আমি শুনেছি হ্যামলেট রহস্যের সমাধান নাকি আজ অবধি মানুষজন করতে পারেনি। তো, ম্যাকবেথ নাটকটাকে যতোটা সরল মনে হয় অতোটা সরল করে বানানোর কথা না শেক্সপিয়ারের।’ পাইপে তামাক ভরতে ভরতে পুরো ব্যাপারটা একবার ভেবে নিলাম। হঠাৎ করেই প্রশ্ন করলাম, ‘তোমার কাকে সন্দেহ হয়?’ তার চটপটে উত্তর ‘ম্যাকডাফ’। শুনে ফিসফিস করে বললাম, ‘হয়েছে কাজ!’
হত্যাকাণ্ড বিষয়ক সেই বিশেষজ্ঞ বলল, ‘ম্যাকডাফই যে ঘটনাটা ঘটিয়েছে সেটা নিশ্চিত।’ তুমি কি করে তা আবিষ্কার করলে?’ আমি জানতে চাইলাম। প্রতি উত্তরে সে বলল, ‘আসলে প্রথমেই যে ধরে ফেলেছিলাম তা না। আমি সন্দেহ করেছিলাম বাংকোকে। তারপর তো দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সে-ই খুন হলো। এই অংশটা বেশ ভালো। প্রথম হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন ব্যক্তিরই দ্বিতীয় খুনের শিকার হওয়া উচিত।’ আমি বিড়বিড় করে বললাম, ‘তাই নাকি?’ আমার তথ্যদাতা বললো, ‘হ্যাঁ নিশ্চয়ই, চমক দিতে থাকাই লেখকের কাজ। আসলে দ্বিতীয় খুনটার পরে আমি অনেকক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত ছিলাম না কে আসল খুনি।’ আমি প্রশ্ন করলাম, রাজা ডানকানের ছেলে ম্যালকম কিংবা ডোনালবেইন নয় কেন? আমার যতদূর মনে পড়ে প্রথম খুনের পরই ওরা পালিয়ে ছিল। তাদের অমন কর্মকাণ্ড তো সন্দেহজনক। উত্তরে মার্কিন নারী বলল, ‘বেশি সন্দেহজনক। খুব বেশিই সন্দেহজনক। কেউ পালিয়েছে মানে সে দোষী নয়। এ বিষয়ে তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো।’ আমি বললাম, ‘আমি নিশ্চিত যে…আমি একটা ব্র্যান্ডি খাবো’, আমি একজন ওয়েটারকে ডেকে নিলাম। আমার সঙ্গিনী আমার দিকে ঝুঁকে আসল, ওর চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে, ওর চায়ের কাপটা কাঁপছে। ‘তুমি কি জানো ডানকানের মৃতদেহটা কে আবিষ্কার করেছিল?’ ও প্রশ্ন করল। ক্ষমা চেয়ে নিলাম আমি, বললাম, আমি ভুলে গেছি। গল্পের প্লটের গভীরে হারিয়ে গিয়ে সে বলল, ‘মৃতদেহটা আবিষ্কার করেছে ম্যাকডাফ। তারপর সে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে আর চিৎকার করে বলছে, “রাজার ঘরে ভয়াবহ দূর্যোগ নেমে এসেছে। হত্যাকাণ্ডের মতন মহা-অধর্ম সংঘটিত হয়েছে সেখানে”, এমনি আরও নানা কিছু সে বলতে থাকে।’ এবার আমার হাঁটুতে একটা গুঁতো দিয়ে সেই ভদ্রমহিলা বলল ‘সবটাই সাজানো নাটক। একটা মরদেহ খুঁজে পেয়ে তোমার তো চট করে এতো কথা বলার কথা না, তাই না?’ তারপর স্থির জ্বলজ্বলে চোখে সে আমার দিকে তাকালো। আমি বলতে নিলাম, ‘আমি…’ সে আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘ঠিক! আগেই মহড়া দেয়া না থাকলে এমন কাজ কেউ করবে না। তুমি নিরপরাধ হলে খুব বড়জোর বলবে, “ও খোদা! এখানে কেউ মরে পড়ে আছে।”‘ এই কথা বলে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী চাহনি নিয়ে সে ঠেস দিয়ে বসলো।
আমি কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম। তারপর তাকে প্রশ্ন করলাম, ‘কিন্তু তৃতীয় হত্যাকাণ্ডের কি ব্যাখ্যা দেবে তুমি? তিন নম্বরের ওই হত্যাকাণ্ডটা ম্যাকবেথ বেত্তাদের তিনশ বছর ধরে ধাঁধায় ফেলে রেখেছে।’ মার্কিন নারী উত্তর করলো, ‘কারণ তারা কখনো ম্যাডাফের কথা চিন্তা করেনি। আমি নিশ্চিত ওটা ম্যাকডাফই ছিল। ভিক্টিমদের মধ্যে একজন দুটা সাধারণ গুন্ডার হাতে খুন হবে এমনটা হতে পারে না–বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ কোন চরিত্রই খুনী হয়ে থাকে।’ এক মুহূর্ত ভেবে নিয়ে প্রশ্ন করলাম, ‘তাহলে, ভোজসভা দৃশ্যের বিষয়ে কি বলবে? বাংকোর ভূত যখন ঢুকলো, ঢুকে নিজ চেয়ারে বসলো, তখন সেখানে একজন অপরাধীর মতন ম্যাকবেথের যে সব কার্যকলাপ তার কি ব্যাখ্যা আছে তোমার কাছে?’ ভদ্রমহিলা আবারো আমার হাঁটুতে একটা গুঁতো দিয়ে বলল, ‘ওখানে কোন ভূত-টূত ছিল না। বিশেষ করে অমন আলোকিত ভোজসভায় আরো ডজনখানেক মানুষের ভেতর ম্যাকবেথের মতন অমন শক্ত সামর্থ লোক ভূত দেখে বেড়ায় না। ম্যাকবেথ কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা করছিল।’ ‘সে কাকে রক্ষা করছিল?’ আমি প্রশ্ন করলাম। উত্তরে সে বলল, ‘অবশ্যই লেডি ম্যাকবেথকে। সে ভেবেছিল তার স্ত্রীই ঘটনাটি ঘটিয়েছে, আর স্ত্রীর কৃতকর্মের দায় সে নিজেই নিতে যাচ্ছিল। স্ত্রী সন্দেহভাজন সাব্যস্ত হলে স্বামী সবসময় এ কাজই করে।’ আমি তখন দাবী করে বসলাম, ‘তাহলে স্বপ্নচারণ দৃশ্য নিয়ে কি বলবে?’ আমার সঙ্গিনীটি বলল, ‘একই কথাই বলব, কেবল ঘুরিয়ে বলব। ঐ সময়টাতে বরং লেডি ম্যাকবেথ রক্ষা করছিল তার স্বামীকে। লেডি ম্যাকবেথ মোটেও ঘুমে ছিল না। তোমার কি ঐ অংশটার কথা মনে আছে যেখানে লেখা আছে, ‘মোমবাতি হাতে লেডি ম্যাকবেথের অনুপ্রবেশ’? আমি বললাম ‘হ্যাঁ।’ আমার সঙ্গিনীটি বলল, ‘কিন্তু, যারা ঘুমের ভেতর হাঁটে তারা কখনও আলো বয়ে বেড়ায় না। তাদের অন্য রকম একটা দৃষ্টি শক্তি থাকে। কখনো কোন স্লিপওয়াকারের আলো বয়ে বেড়ানোর কথা শুনেছ?’ আমি বললাম, ‘না, আমি কখনও শুনিনি।’ মার্কিনি বলল, ‘তাহলে, তার মানে সে ঘুমাচ্ছিল না। নিশ্চিত সে ম্যাকবেথকে রক্ষা করতে অপরাধীর ভান করছিল।’ আমি বললাম, ‘আমি নিশ্চিত…আমি আরেকটা ব্র্যান্ডি খাব’, আর ওয়েটারকে ডাক দিলাম। ব্র্যান্ডিটা নিয়ে আসলে পরে, আমি খুব দ্রুত ওটা শেষ করে, যাবার জন্য উঠে পরলাম, বললাম, ‘মনে হচ্ছে তুমি নতুন কিছু একটা পেয়েছ। তুমি কি ঐ ম্যাকবেথটা আমায় ধার দেবে? আমি আজ রাতে ওটা একটু দেখতে চাই।মনে হচ্ছে বইটা যেন আমি কখনও ঠিকঠাক পড়িনি।’ সে বলল, ‘বইটার ব্যবস্থা আমি করে দিচ্ছি তোমার জন্য, কিন্তু দেখবে, আমিই ঠিক।’
ঐ রাতে আমি পুরো নাটকটা ভাল করে পড়লাম, আর পরের দিন সকালের নাস্তার পরে সেই মার্কিন নারীকে খুঁজে বের করলাম। তাকে গলফ কোর্সের সবুজ ঘাসের ওপর দেখে আমি চুপিসারে তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম আর আমার হাতে তার হাতটা জড়িয়ে নিলাম। সে অবাক হল। আমি তাকে নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমার সাথে একান্তে কথা হতে পারে?’ সতর্ক ভাবে হ্যাঁ সূচক মাথা দোলাল সে, আর আমার পেছন পেছন এক নির্জন স্থানে আসল। সে বলল, ‘কিছু পেয়েছ তুমি?’ বিজয়ীর ভঙ্গিমায় বললাম, ‘খুনীর নাম খুঁজে পেয়েছি!’ ‘তুমি বলতে চাইছ ম্যাকডাফ ও কাজ করেনি?’ সে বলল। আমি বললাম ‘ঐ খুনগুলোর ব্যাপারে ম্যাকবেথ আর ম্যকবেথের স্ত্রী যেমন নির্দোষ ম্যাকডাফও তেমনি নির্দোষ।’ আমি আমার সাথে থাকা নাটকের বইটা খুললাম, অংক ২, দৃশ্য ২। বললাম, ‘দেখ, এখানটায় লেডি ম্যাকবেথ বলছে, “তাদের ছোরাগুলো প্রস্তুত করে বিছিয়ে রেখেছিলাম আমি। এগুলো তার না দেখার কথা না। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে যদি আমার বাবার মতন না দেখাত তবে আমি খুনটা করতাম।” ধরতে পারছ ব্যাপারটা?’ মার্কিন নারীর স্পষ্ট উত্তর, ‘না।’ আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘কিন্তু এ তো বেশ সহজ একটা বিষয়। অনেক বছর আগেই যে কেন এটা আমার চোখে পরেনি! ঘুমন্ত ডানকানকে দেখতে যে লেডি ম্যাকবেথের বাবার মতন লাগছিল তার কারণ ওটা লেডি ম্যাকবেথের বাবাই ছিল!’ ‘বাহ বা!’ আমার সঙ্গিনী হালকা স্বরে বলল। আমি বলে চললাম, ‘লেডি ম্যাকবেথের বাবাই রাজাকে মেরে ফেলেছিল, আর কারও আসার শব্দ শুনে লাশটাকে খাটের নীচে ঠেলে দিয়ে নিজে বিছানার ওপর শুয়ে পরেছিল।’ ‘কিন্তু’, আমার সঙ্গিনী বলল, ‘যে লোক কিনা গল্পে কেবল একবার হাজির হয়েছে তাকে তুমি খুনী সাব্যস্ত করতে পারো না।’ আমি বললাম ‘সে আমি জানি’ আর বই থেকে অংক ২, দৃশ্য ৪ বের করলাম। ‘এখানে বলা আছে “একজন বুড়ো লোককে সাথে করে র’সের প্রবেশ।” এই বুড়ো লোকটির পরিচয় কোথাও দেয়া হয়নি। আমার ধারণা এই বুড়ো লোকটাই লেডি ম্যাকবেথের বাবা যার উচ্চাভিলাষ ছিল নিজ মেয়েকে রানী বানানো, আর এটাই হল খুনের মটিভ।’ ‘কিন্তু তারপরও’ মার্কিনি হাঁক দিয়ে বলল, ‘সে তো একটা মাইনর ক্যারেক্টার!’ আমি বিজয়ীর হাসি হেসে বললাম, ‘তোমার আর তা মনে হবে না যখন তুমি বুঝতে পারবে যে সেই রহস্যময়ী তিন বোনের মধ্যে ছদ্মবেশে লেডি ম্যাকবেথের বাবাও একজন!’ ‘তুমি বলতে চাইছ, তিন ডাইনির একজন?’ ‘ঠিক তাই!’ বুড়ো লোকটার এই উক্তিটি ভাল করে শোন। “যে বাজ চড়েছিল চূড়ায় আপন অহংকারে, শিকারী পেঁচা তারে বধ করেছে শেষ মঙ্গলবারে।” কার মত শোনাচ্ছে বল তো?’ অনিচ্ছুক ভঙ্গীতে আমার সঙ্গিনী উত্তর করল, ‘তিন ডাইনি যেমন করে কথা বলে তেমনটাই শোনাচ্ছে।’ আমি আবারো বললাম, ‘ঠিক তাই।’ আমেরিকান মহিলাটি বলল, ‘আ! হয়তো তুমি ঠিক, কিন্তু–’ আমি বললাম, ‘আমি নিশ্চিত আমি ঠিক। জানো, এবার আমি কি করবো?’ ‘না! কি করবে?’ আমি বললাম, ‘হ্যামলেটের একটা কপি কিনব, তারপর সেটার সমাধান করব!’ আমার সঙ্গিনীর চোখদুটো চকচক করে উঠল, ‘তাহলে, তুমি মনে কর ও কাজ হ্যামলেট করেনি?’ আমি বললাম, ‘আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে সে করেনি।’ সে জানতে চাইলো ‘তাহলে, তুমি কাকে সন্দেহ কর? আমি তার দিকে রহস্যপূর্ণভাবে তাকালাম, বললাম, ‘সবাইকে’, বলে যেমন নিশ্চুপ ভাবে এসেছিলাম তেমনি নিশ্চুপভাবে গাছপালার ছোট ঝাড়ের মধ্যে উধাও হয়ে গেলাম।